দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, দুর্নীতি রয়ে গেলে উন্নয়ন কখনোই স্থায়ী হতে পারে না। তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে দুদকের কাছে কোনো অভিযোগই আসবে না।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে নাগরিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এই সভার আয়োজন করে।
দুদক চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, “দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকলে উন্নয়ন টেকসই হবে। নাগরিকরা যদি সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পারিবারিক পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন, তাহলে আমরা ইতিবাচক ফলাফল দেখতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “অধিকাংশ অভিযোগে সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাব থাকে, যার ফলে কোনো প্রমাণ ছাড়া মামলা দায়ের করা সম্ভব হয় না।”
তিনি নাগরিকদের সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করে জানান যে, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচারণা, স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপন।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ বলেন, “বর্তমানে কিছু নতুন ব্যবসায়ী, যারা আগে কখনও ব্যবসা করেননি, প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছেন। মানি লন্ডারিংয়ের সাথে অনেক ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, আমলা এবং রাজনীতিবিদ জড়িত।”
এইচআরপিবির সভাপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে সফল হয়েছে বলে মনে হয় না, কারণ বড় দুর্নীতিবাজরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন। ক্ষমতাসীনরা দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন।”
তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামিম হায়দার, এবং এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন।